ছাত্রজীবনে শৃঙ্খলা /Chatra Jibone Shringkhala Prabandha Rachana

আপনি কি অনলাইনে “ছাত্রজীবনে শৃঙ্খলা” প্রবন্ধ রচনাটি খুঁজছেন,

যদি তাই হয়,

আপনি তাহলে একদম সঠিক আর্টিকেলে এসে উপস্থিত হয়েছেন।

আমি এই পোস্টে আপনাদের সাথে শেয়ার করছি -অত্যন্ত সহজ-সরল ভাষায় “ছাত্রজীবনে শৃঙ্খলা” প্রবন্ধ রচনাটি।

আমার এই আর্টিকেলটি “ছাত্রজীবনে শৃঙ্খলা” প্রবন্ধ রচনার জন্যে একটি দারুণ নোট। আপনি যদি এই প্রবন্ধটি পরীক্ষায় ঠিক এইভাবেই লিখতে পারেন তাহলে আপনি গ্যারান্টি ফুলমার্কস পাবেন -ই।

অতএব এই আর্টিকেলটি অত্যন্ত মনোযোগ সহকারে প্রথম থেকে শেষ পর্যন্ত পড়ার বিশেষ অনুরোধ রইল…..

ভূমিকাঃ-

মানুষ দৈনন্দিন জীবনে নিয়মের অনুবর্তী হয়ে যে কাজ সম্পাদন করে তাই হল শৃঙ্খলা বা নিয়মানুবর্তিতা। আর শৃঙ্খলাকে আন্তরিকভাবে গ্রহণ এবং চর্চার মধ্যে দিয়েই জন্ম হয় শৃঙ্খলাবোধর।শৃঙ্খলাবোধ ও নিয়মানুবর্তিতা হল মনের এক ধরনের শিক্ষা। শৃঙ্খলাবদ্ধ সাধারন মানুষ হয় অসাধারণ দৃঢ় ক্ষমতার অধিকারী এই নিয়ম-শৃঙ্খলার সূতিকাগৃহ হল ছাত্রজীবন। লেখাপড়ার পাশাপাশি সুন্দর জীবন গঠনের শিক্ষা এইসময়ই অর্জন করতে হয়। ব্যক্তি ও সামাজিক জীবনের শৃঙ্খলা বোধ বয়ে আনে শান্তিময় স্বাভাবিক জীবন। তাই ছাত্রজীবনে শৃঙ্খলা পরায়ণ হওয়া অত্যন্ত জরুরি।

প্রকৃতিতে শৃঙ্খলাঃ-

প্রকৃতির সর্বত্র শৃঙ্খলা বিরাজমান। প্রকৃতির নিয়মে সকালে সূর্য ওঠে সন্ধ্যায় অস্ত যায়। রাতের আকাশে উঁকি দেয় চাঁদ ও তারা। দিবারাত্রি এই পরিক্রমার পথ পেয়ে প্রকৃতিতে চলে ষড়ঋতুর আবর্তন। প্রকৃতির এই নিয়মের বন্ধনে বাঁধা মানুষের জীবন ও অস্তিত্ব। তাই প্রকৃতির মতই মানুষের জীবনে অনিবার্যভাবে এসে পড়ে শৃঙ্খলার দায়। তাই শৃঙ্খলা পরায়ণ নাহলে প্রকৃতির ভারসাম্য বিনষ্ট হবে।

ছাত্রজীবনে শৃঙ্খলাবোধঃ-

ছাত্রজীবনই শৃঙ্খলাবোধ ও সামাজিক দায়িত্ব অনুশীলনের উপযুক্ত সময়। এইসময় সজীব কোমল মনের মধ্যে দায়িত্ব পালনের প্রচেষ্টা শুরু হলে পরবর্তী জীবনে তার সুফল পাওয়া যাবে। ছাত্রছাত্রীরা একদিন আগামী জাতির নেতৃত্ব দেবে। কিন্তু তারা যদি সেজন্য নিজেদের সঠিকভাবে প্রস্তুত না করে তাহলে তা ব্যর্থ হবে। তাই ছাত্রজীবনে শৃঙ্খলা পরায়ণ হতেই হবে তবেই একটি উজ্জ্বল দিক তৈরি হবে।

প্রাচীন শিক্ষায় শৃঙ্খলার স্থানঃ-

শৃঙ্খলাবদ্ধ,সুসংহত সৈন্যবাহিনী যুদ্ধ করতে পারে। প্রাচীনকাল থেকে আজও তাই শৃঙ্খলাবোধের শিক্ষা দেওয়া হয়। “ছাত্রানাং অধ্যয়নং তপঃ” কথাটি সত্য। কিন্তু অধ্যঝয়ন বলতে শুধু পুঁথিগত বিদ্যা অর্জনকে বোঝায় না। তাই প্রাচীনকালে পাঠ দেওয়া হতো। আরুণি উদ্দালকের কাহিনী তার উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত। এইরকম বহু দৃষ্টান্ত আমরা প্রাচীন শিক্ষায় পেয়ে থাকি।

শৃঙ্খলাবোধ অর্জনের উপায়ঃ-

শৃঙ্খলাবোধ আত্মস্থ করার জন্য কিছু জিনিস মেনে চলা উচিত। মর্যাদা অনুসারে মানুষের সঙ্গে শ্রদ্ধা, প্রীতি ও স্নেহের সম্পর্ক বজায় রাখা এবং সামাজিক রীতি-নীতিকে যুক্তি বিবেচনার মাধ্যমে গ্রহণ করা। গুরুজনদের আদেশ – উপদেশ পালন করার যথাসাধ্য চেষ্টা করতে হবে যেহেতু তাঁরা অনেক বেশি অভিজ্ঞ। এছাড়াও নানান মহাপুরুষদের জীবনী পাঠ ও তা থেকে অনুপ্রেরণা লাভ করা শৃঙ্খলাবোধ গড়ে তুলতে সাহায্য করে। এছাড়াও সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ হলো বন্ধু নির্বাচন। ভালো ছেলেমেয়েদের সঙ্গে বন্ধুত্ব স্থাপন জীবনকে সুন্দর সুশৃঙ্খল করে তোলে। তবেই একটি সুস্থ সমাজ গড়ে উঠবে।

শৃঙ্খলা, শৃঙ্খল নয়ঃ-

শৃঙ্খলা কাম্য হলেও কখনো কখনো শৃঙ্খলার বাড়াবাড়ি জীবনের স্বাভাবিক গতি ছন্দের পথে বাধা হয়ে দাঁড়ায়। নিয়ম ও নিয়ন্ত্রণের আতিশয্য যদি শৃঙ্খলা না হয়ে শৃঙ্খল হয়ে পড়ে তাহলে জীবনের স্বাভাবিক বিকাশ ব্যাহত হতে বাধ্য। এ সম্পর্কে সতর্ক থাকা উচিত। মনে রাখতে হবে জীবন অনুগামী শৃঙ্খলার স্বাভাবিক অনুশাসনেই জীবন তার স্বাভাবিক ছন্দ পায়। তাই আমাদের শৃঙ্খলা হওয়াটা অত্যন্ত জরুরী।

সমাজ ও জাতীয় জীবনে শৃঙ্খলাঃ-

মানুষের সামাজিক জীবন একটি সংঙ্ঘবদ্ধ জীবন। শৃঙ্খলা না থাকলে এর সুন্দর কাঠামোটি ভেঙে পড়ে। সমাজে অত্যাচার, লুন্ঠন ও অসামাজিক ক্রিয়া-কলাপ বৃদ্ধি পায়। যেখানে নিয়মশৃঙ্খলা নেই সেখানে যে কেউ অনায়াসে স্বেচ্ছাচারিতার চর্চার সুযোগ পায়। সামাজিক নিরাপত্তা বিঘ্নিত হয়। সমাজ থেকে গড়ে ওঠে জাতি। রাষ্ট্রের সকল নাগরিকের মধ্যে নিয়ম কানুন মেনে চলার প্রবণতা না থাকলে রাষ্ট্র অকার্যকর রাষ্ট্রে পরিণত হয়। তাই জাতীয় অগ্রগতির প্রয়োজন এবং সভ্য সমাজের বাসিন্দা হিসেবে আমাদের সকলের উচিত শৃঙ্খলাকে জীবনের অনিবার্য অনুসর্গ হিসেবে গ্রহণ করা। যা সমাজ ও জাতীয় জীবনে বিশেষ প্রয়োজন।

উপসংহারঃ-

শৃঙ্খলাবোধ জ্ঞান ও চিন্তার প্রসারেও ইতিবাচক প্রভাব ফেলে। শৃঙ্খলা মানুষকে সমৃদ্ধির দিকে ধাবিত করে। ছাত্রজীবনে শৃঙ্খলার অর্জন ভবিষ্যতের একজন সুনাগরিক তৈরি করে যা সুন্দর একটি প্রজন্মের জন্ম দেয় যা আমাদের প্রত্যেকেরই কাম্য।

Leave a Comment