আপনি কি অনলাইনে “পরিবেশ সুরক্ষায় ছাত্রসমাজের ভূমিকা” প্রবন্ধ রচনাটি খুঁজছেন,
যদি তাই হয়,
আপনি তাহলে একদম সঠিক আর্টিকেলে এসে উপস্থিত হয়েছেন।
আমি এই পোস্টে আপনাদের সাথে শেয়ার করছি -অত্যন্ত সহজ-সরল ভাষায় “পরিবেশ সুরক্ষায় ছাত্রসমাজের ভূমিকা” প্রবন্ধ রচনাটি।
আমার এই আর্টিকেলটি “পরিবেশ সুরক্ষায় ছাত্রসমাজের ভূমিকা” প্রবন্ধ রচনার জন্যে একটি দারুণ নোট। আপনি যদি এই প্রবন্ধটি পরীক্ষায় ঠিক এইভাবেই লিখতে পারেন তাহলে আপনি গ্যারান্টি ফুলমার্কস পাবেন -ই।
অতএব এই আর্টিকেলটি অত্যন্ত মনোযোগ সহকারে প্রথম থেকে শেষ পর্যন্ত পড়ার বিশেষ অনুরোধ রইল…..
ভূমিকাঃ-
পৃথিবীতে মানুষ জীবনযাপন করে মূলত দুটি মৌলিক উপাদানের ওপর ভিত্তি করে, তার একটি হলো সহায় এবং অন্যটি হলো সম্ভাবনা। সহায় এবং সম্ভাবনা এই দুইয়ের পারস্পরিক মিথস্ক্রিয়ার উপর ভিত্তি করে মানবসভ্যতার উন্নতিসাধন হয়। সহায় এবং সম্ভাবনা সভ্যতাকে যথাক্রমে ধারণ ও বহন করে নিয়ে চলে। সামাজিক সভ্যতার প্রকৃত ধারক অর্থাৎ সহায়ক হিসেবে কাজ করে পরিবেশ এবং বাহক অর্থাৎ সম্ভাবনা হিসেবে কাজ করে আমাদের ছাত্রসমাজ। এই দুইয়ের সার্থক পারস্পরিক মিথস্ক্রিয়ার মাধ্যমেই গড়ে উঠতে পারে এই পৃথিবীর উজ্জ্বল ভবিষ্যৎ যা আমাদের প্রত্যেকের-ই কাম্য।
পরিবেশ সুরক্ষার প্রয়োজনীয়তাঃ-
পরিবেশ সুরক্ষা বলতে পরিবেশের অবনমন এবং পরিবেশ দূষণ প্রতিরোধ করে পরিবেশ সংরক্ষণ করাকে বোঝানো হয়েছে। পরিবেশ থেকে জীবনধারণের সকল উপকরণ গ্রহণ করে মানুষ বেঁচে থাকে, কিন্তু এই আহরণ ক্রমাগত দিনে দিনে নির্বিচার শোষণে পরিণত হয়েছে। যুগ যুগ ধরে এই শোষণের ফলে আমাদের পারিপার্শ্বিক পরিবেশ ব্যাপকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে এবং পরিবেশের বাস্তুতান্ত্রিক ভারসাম্য বিঘ্নিত হয়েছে। এই ভারসাম্যহীনতা দূর করার জন্য পরিবেশ সংরক্ষণ একান্ত প্রয়োজন নচেৎ পরিবেশ ধীরে ধীরে বসবাসের অনুপযোগী হয়ে উঠবে।
বর্তমানকালে ছাত্রসমাজ ও পরিবেশের সম্পর্কঃ-
ভারতের ইতিহাসে প্রাচীনকালে গুরুকুলমূলক শিক্ষা কাঠামোর উল্লেখ আছে, যে শিক্ষাব্যবস্থায় শিক্ষার্থীরা পঠনপাঠনের পাশাপাশি পরিবেশ এর গুরুত্বকে অনুধাবন করতে শিখত। এই শিখন এর মধ্য দিয়ে ছাত্রছাত্রীদের মনে পরিবেশ সম্পর্কে সচেতনতা এবং গভীর মূল্যবোধ গড়ে উঠত,যা পরবর্তীতে ধারণমূলক উন্নয়নের পথে অগ্রসর হতে সাহায্য করত। বর্তমানকালে দ্রুতগতির জীবনযাত্রায় প্রাচীন যুগের সেই পরিবেশমূলক শিখনের রূপ বহুমাত্রায় পাল্টে গেছে। আধুনিক যুগে বহুকাল যাবত পরিবেশ শিক্ষাকে ছাত্রছাত্রীদের পঠন-পাঠনের অন্তর্ভুক্ত করা হয়নি যার ফলে খুব স্বাভাবিকভাবেই তাদের মধ্যে পরিবেশ সচেতনতার অভাব সুস্পষ্ট লক্ষ্য করা যায়। বিগত কয়েক বছরে শিক্ষাক্ষেত্রে পরিবেশ শিক্ষা বিষয়টিকে অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। বিদ্যালয় থেকে স্নাতক স্তর পর্যন্ত যাতে বর্তমান ছাত্রসমাজের মনে পরিবেশ সচেতনতা ও পরিবেশ সুরক্ষার বীজ রোপন করা যায়। এই বীজ রোপিত হলে ধীরে ধীরে তা পরিবেশ সুরক্ষা সম্পর্কে মূল্যবোধের মহীরূহ হয়ে উঠবে যা বলা বাহুল্য।
পরিবেশ উন্নয়নমূলক কর্মসূচি গ্রহণঃ-
ছাত্র-ছাত্রীদের মনে পরিবেশ সংক্রান্ত বিষয়ে সচেতনতা গড়ে তোলার পাশাপাশি প্রাথমিক শিক্ষাকাল থেকেই তাদের একটু একটু করে পরিবেশ উন্নয়নমূলক ভ্রমণ, পৃথিবীর উদ্ভিদ ও প্রাণী বৈচিত্র্যের সঙ্গে পরিচিতি স্থাপন, পরিবেশ সচেতনতার প্রসারমূলক প্রচারে অংশগ্রহণ ইত্যাদিকেও পরিবেশ উন্নয়নমূলক কর্মসূচির অন্তর্ভুক্ত করা যায়। শিক্ষামূলক প্রতিষ্ঠানগুলিতে ৫ই জুন “বিশ্ব পরিবেশ” দিবস পালন করার মাধ্যমে শিক্ষার্থীদের মনে পরিবেশ সুরক্ষার বিষয়টিকে আরো দৃঢ়ভাবে গেঁথে দেওয়া সম্ভব তবেই কিনা পরিবেশকে সুস্থ ও স্বাভাবিক রাখা সম্ভবপর হবে।
উপসংহারঃ-
বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ অত্যন্ত দুঃখের সঙ্গে বলেছিলেন – “যাহারা তোমার বিষাইছে বায়ু, নিভাইছে তব আলো, তুমি কি তাদের ক্ষমা করিয়াছো তুমি কি বেসেছ ভালো?” বর্তমানে ছাত্রসমাজকেও কবিগুরুর এই কথা স্মরণে রেখে পরিবেশ সুরক্ষা সংক্রান্ত বিষয়ে অগ্রণী ভূমিকা পালন করতে হবে। ছাত্রছাত্রীরা ভবিষ্যৎ সমাজের প্রতিনিধি তাই তাদের হাত ধরেই একটি সুস্থ-স্বাভাবিক সুন্দর পৃথিবীর পট রচনা সম্ভব তবেই আগামী প্রজন্ম একটি সুস্থ সুন্দর স্বাভাবিক পরিবেশ উপহার পাবে।